রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৮ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
ফুলকুঁড়ি আসর এর ফাইনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের অনুষ্ঠিত আওয়ামী ঘরানার বিতর্কিত লোকদের দিয়ে উজিরপুর উপজেলা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সান্টু খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা
বন্দিদের আলোর পথ দেখাচ্ছে বরিশাল কেন্দ্রীয় করাগার

বন্দিদের আলোর পথ দেখাচ্ছে বরিশাল কেন্দ্রীয় করাগার

দখিনের খবর ডেস্ক ॥ মানুষ বিভিন্ন কারণে অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়তে পারে। আর অপরাধের সাথে জড়িত হলেই শাস্তি নিশ্চিতকরণে পাঠানো হয় কারাগারে। দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি কারাবন্দিদের সংশোধন করে গড়ে তোলার দায়িত্ব বাংলাদেশ কারা বিভাগের। তাই বাংলাদেশ কারা বিভাগের মূলমন্ত্র ‘রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ’। এছাড়া আধুনিক সভ্যতায় কারাবন্দিদের সংশোধন ও সুপ্রশিক্ষিত করে সভ্য সমাজের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিষ্ঠান হলো কারাগার। কারা বিভাগ বাংলাদেশের একটি সুপ্রাচীন প্রতিষ্ঠান। ১৭৮৮ সালে তৎকালীন শাসকদের দ্বারা একটি ক্রিমিনাল ওয়ার্ড নির্মাণের মাধ্যমে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের তথা কারা বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। যার ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন দেশে বাংলাদেশ জেল বা বিডিজের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার রয়েছে। দেশের ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগারের মধ্যে অন্যতম বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার। বিভাগীয় শহর বরিশালের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই কেন্দ্রীয় কারাগার ১৮২৯ সালে প্রথমে জেলা কারাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালের ৩ মার্চ এটিকে জেলা কারাগার থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে রূপান্তর করা হয়। ২১ একরের বেশি জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই কারাগারের অভ্যন্তরে সাড়ে ৯ একর এবং কারার বাইরে প্রায় আট একর (বাসা বাড়ি, মাঠ ও পুকুর) জমি রয়েছে। এছাড়া নগরীর কাশিপুরস্থ বাগানবাড়িতে রয়েছে আরও প্রায় চার একর জমি। কেন্দ্রীয় এই কারাগারে ৬০৩ জন পুরুষ ও ৩০ জন নারী এবং কারা হাসপাতালে ৫৮ জনসহ মোট ৬৯১ জন বন্দির ধারণক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে বন্দির সংখ্যা এক হাজার দুই শতাধিক। এসব বন্দিদের কঠোর নিরাপত্তা ও বন্দিদের মাঝে শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে ৩২ ক্যাটাগরির ৩৩৮ জন জনবল কর্মরত রয়েছে। বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার মো. মুনীর হোসাইন জানান, কারাভ্যন্তরে হাজতি বন্দিদের জন্য কীর্তনখোলা ও ধানসিঁড়ি নামে দুটি ভবন রয়েছে। যাতে মোট ছয়টি ওয়ার্ড রয়েছে। কয়েদি বন্দিদের জন্য সিডর ভবন-১ ও ২ এবং চন্দ্রদ্বীপ নামে তিনটি ভবন রয়েছে। এতে মোট পাঁচটি ওয়ার্ড রয়েছে। কিশোর বন্দিদের জন্য একটি কিশোর ওয়ার্ড, মহিলা বন্দিদের জন্য দুটি ওয়ার্ড, পুরুষ বন্দিদের জন্য ১২টি সেল এবং ৫৮ শয্যাবিশিষ্ট আটটি ওয়ার্ডের একটি কারা হাসপাতাল ভবন রয়েছে। এ ছাড়া কারাভ্যন্তরে একটি ডিভিশন ভবনও আছে।
তিনি আরও জানান, মানবাত্মাকে জীবনবোধে বিকশিত করে বন্দিদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ জাগিয়ে তুলতে কারাগারে একটি সমৃদ্ধ কারা লাইব্রেরি রয়েছে। বই পড়ার মাধ্যমে যাতে বন্দিরা নিজেদের জানতে পারে এবং নিজেদের জীবনকে আলোকিত করে তুলতে পারে সে জন্য কারা লাইব্রেরিতে বিভিন্ন ধরনের বই রাখা হয়েছে। যেমনÍ সাহিত্য, উপন্যাস, কবিতার বই, ছোট গল্প, বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তির জীবনী, ধর্মীয় বই, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর জীবনীসহ নানামুখী বই। এসব তথ্য নিশ্চিত করে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, মুজিববর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি সশ্রদ্ধ সম্মান প্রদর্শনের জন্য ইতোমধ্যে কারা লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গ্রন্থ, ম্যাগাজিন, জার্নাল, বঙ্গবন্ধুর শৈশব-কৈশোর, রাজনৈতিক জীবনসহ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রকাশিত নানা ধরনের বই সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ ছাড়া কারা অধিদপ্তর থেকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত দেয়া ২৩টি বই বঙ্গবন্ধু কর্নারে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এসব বইয়ের মাধ্যমে কারাবন্দিদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলা হচ্ছে। জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার হিসেবে যোগদান করেন প্রশান্ত কুমার বর্মণ। তিনি যোগদান করার পর থেকেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তুলছেন এই কারাগারকে। কারাগারের অভ্যন্তরে বিভিন্ন কক্ষ, কয়েদিদের থাকার স্থানসহ বরিশাল কারাগারকে সৌন্দর্যম-িত করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। বন্দিদের নিরাপদ আটক নিশ্চিত করা প্রসঙ্গে সিনিয়র এই জেল সুপারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারাগারের নিরাপত্তা অক্ষুণ্ন্ন রাখতে আর্চওয়ে মেটাল ডিটেক্টর, হ্যান্ডহেল্ড মেটাল ডিটেক্টর, ওয়াকিটকি, মোবাইল ফোন জ্যামার, সিসি ক্যামেরা, ফগার মেশিন, থার্মাল স্কানার ইত্যাদি যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।
কারাগারের কঠোর নিরাপত্তা ও বন্দিদের মাঝে শৃঙ্খলা বজায় রাখা, বন্দিদের সাথে মানবিক আচরণ করা, যথাযথভাবে তাদের বাসস্থান, খাদ্য, চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে। সেই সাথে বন্দিদেরকে তাদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও আইনজীবীদের সাথে সাক্ষাৎ নিশ্চিত করা এবং একজন সুনাগরিক হিসেবে সমাজে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রেষণা-প্রশিক্ষণ প্রদান কাজ চলমান রয়েছে।
বন্দিরা কারামুক্ত হলে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারামুক্ত হওয়ার পর বন্দিদের কর্মসংস্থানের জন্য বরিশাল জেলা প্রশাসন এবং সমাজসেবা কার্যালয়ের সহযোগিতায় অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির পক্ষ থেকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়। ইতোমধ্যে ২০০ থেকে ২৫০ জন বন্দিকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়ার পর সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে টেইলারিং, কার্পেন্টার, বই বাঁধাই, মৌসুমী সবজি চাষ, ইলেকট্রিক-ইলেকট্রনিক্সসহ বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া মেরামত কাজ, হস্তশিল্পÍ মোড়া, বেত, বুটিকসহ আরও নানা ধরনের কাজ শিখানো হয়। নারী বন্দিদেরকে সেলাই, অ্যামব্রয়ডারি, নকশীকাঁথা, বেডশিট, বালিশের কভার ও শাড়ির ওপর ডিজাইনসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তাদের তৈরিকৃত এসব পণ্য বাইরে বিক্রি করে আয়ের একটি অংশ এই শ্রমে নিয়োজিত বন্দিদের ব্যক্তিগত পিসিতে জমা দেয়া হয়। সম্প্রতি বেশ কিছু নারী-পুরুষ বন্দি কারামুক্ত হলে কর্মসংস্থানের জন্য তাদেরকে কয়েক দফায় সেলাই মেশিন ও ভ্যান উপহার দিয়েছেন জেলা প্রশাসন এবং সমাজসেবা কার্যালয়ের অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি। কারাগারে বন্দিদের ধর্ম-কর্মে উৎসাহী করা হয় জানিয়ে সিনিয়র এই জেল সুপার বলেন, বন্দিদের নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষাও দেয়া হচ্ছে। নিয়মিত নামাজ শিক্ষা, কুরআন শিক্ষা এবং হাদিসের আলোকে আলোচনা করা হয়। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি কারাভ্যন্তরে বন্দিদের সাধারণ শিক্ষা প্রদান ও নিরক্ষর বন্দিদের স্বাক্ষর জ্ঞান শিখানো চলমান রয়েছে। একই সাথে অনেক বন্দি অক্ষর জ্ঞান না থাকায় স্বাক্ষর করতে পারতো না, তাদেরকে অক্ষর চিনিয়ে স্বাক্ষর করা শিখানোর ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এছাড়া বন্দি মায়েদের সাথে থাকা শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে কারাভ্যন্তরে শিশু বিকাশ থেকে একজন নারী শিক্ষিকা এসে শিশুদের পাঠদান করেন। এতে শিশুর অভিভাবকরাও বেশ আনন্দিত।
বন্দিদের বিনোদনের জন্য কারাভ্যন্তরে সঙ্গীতদল গঠন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কারাভ্যন্তরের সঙ্গীতদলটি হারমোনিয়াম, তবলা, কংগো, ঢোল, খঞ্জনি, গিটারসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ বাঁজিয়ে প্রতিদিন নির্দিষ্ট স্থানে বসে সঙ্গীতচর্চা করেন। তারা বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে বন্দিদের আনন্দ দেয়ার জন্য সঙ্গীত পরিবেশন করে থাকেন। এতে বন্দিরা কারাভ্যন্তরে সঙ্গীতদলের গান শুনে বেশ আনন্দিত। এছাড়া কারাবন্দিদের বিনোদনের জন্য টেলিভিশন, পত্র-পত্রিকা, সাময়িকী, ক্রিকেট, ফুটবল, লুডু, দাবা, ক্যারম, ব্যাডমিন্টন, গুলিভব খেলার ব্যবস্থা রয়েছে।
এমনকি কারাগারের স্টাফদের চাকরির একঘেয়েমি দূর করার জন্য কারাক্লাবে দাবা, লুডু, ক্যারম, ব্যাডমিন্টন, ফুটবল, ক্রিকেট, কাবাডি ও টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। কারাগারে থাকা বন্দিদের সাথে দেখা করতে আসা ব্যক্তিদের সেবা প্রদান সম্পর্কে এই কর্মকর্তা জানান, আত্মীয়-স্বজন হাজতি বন্দিদের সাথে ১৫ দিন অন্তর একবার দেখা করতে পারবেন। কয়েদি বন্দির সাথে মাসে একবার দেখা করা যাবে। একবারে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটের জন্য এবং সর্বোচ্চ পাঁচজন একসাথে একজন বন্দির সাথে দেখা করতে পারবে। বর্তমানে করোনা মহামারির কারণে বন্দিদের সাথে আত্মীয়-স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে। তবে অস্থায়ী টেলিফোন বুথে বন্দিদের সাথে কথা বলার সুযোগ করা হয়েছে। সাক্ষাৎ প্রার্থীদের সহজ ও ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সরবরাহের লক্ষ্যে কারাগারের বহির্বিভাগ ও অভ্যন্তরে একটি করে দোকান চালু করা হয়েছে। ফলে আগত সাক্ষাৎপ্রার্থীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবাদি ন্যায্যমূল্যে ক্রয় করে বন্দিদের সরবরাহ করতে পারেন। এতে একদিকে যেমন কারাগারে অবৈধ দ্রবাদির প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখাও সহজ হচ্ছে।
ওকালতনামায় বন্দির স্বাক্ষরের জন্য কোনো অর্থের প্রয়োজন হয় না জানিয়ে সিনিয়র জেল সুপার জানান, ওকালতনামা স্বাক্ষরে অবৈধ অর্থের লেনদেন রোধে কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে ওকালতনামা দাখিলের জন্য নির্ধারিত বক্স রয়েছে। নির্ধারিত সময় অন্তর বক্স খুলে ওকালতনামায় স্বাক্ষরের পর বন্দির বিজ্ঞ কৌঁসলি বা আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করা হয়। যদি এ ব্যাপারে কারাগার সংশ্লিষ্ট কারো বিরুদ্ধে অর্থ দাবির অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তাৎক্ষণিক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। মরণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কারা কর্তৃপক্ষ কেমন ভূমিকা রাখছে জানত চাইলে তিনি জানান, কোভিড-১৯ মহামারি রোধে কারাভ্যন্তরে প্রবেশের আগে প্রধান ফটকে বন্দি ও স্টাফদের তাপমাত্রা নির্ধারণের জন্য সমপ্রতি থার্মাল স্ক্যানার স্থাপন করা হয়েছে। ভাইরাসটির সংক্রমণ প্রতিরোধে আরপি গেট, প্রধান ফটকে স্প্রে, বন্দিদের মাঝে মাস্ক বিতরণ, হাত ধৌতকরণের ব্যবস্থার পাশাপাশি তা নিয়মিত প্রতিপালন করা হচ্ছে। যার কারণে কারাগারে বন্দি এবং কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ যাবত কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। এছাড়া নতুনভাবে কারাগারে প্রবেশ করা আসামিদের কারাভ্যন্তরে ১৪ দিন আলাদাভাবে রাখা হয়। এমনকি করোনা সুরক্ষার জন্য ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় এই কারাগার সংশ্লিষ্ট কারারক্ষী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ৮০ শতাংশ প্রতিষেধক ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। মাদকাসক্ত বন্দিদের বিষয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, কারাগারে আগত মাদকাসক্ত বন্দিদেরকে রাখার জন্য কারাভ্যন্তরে আলাদাভাবে একটি ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সেখানে মাদকাসক্ত বন্দিদের মানসিক বিকাশের জন্য বন্দিদের মোটিভেশন প্রদান করা হয়। এ ছাড়া মাদকাসক্ত বন্দিদের চিত্ত বিনোদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার মাধ্যমে তাদেরকে ব্যস্ত রাখা হয়, যেন তারা মাদক থেকে সহজেই দূরে আসতে পারে। তাছাড়া মাদকাসক্ত বন্দিদের কারামুক্ত হলে তাদের বাইরে আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বর্তমান সরকারের আমলে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে কি ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ হয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র জেল সুপার জানান, কারাগারে নবসৃষ্ট জনবল বৃদ্ধি পাওয়ায় গাডিং স্টাফদের আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য পাঁচতলা ভিতে তিন তলাবিশিষ্ট একটি ব্যারাক এবং কারাবন্দিদের জন্য পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি ব্যারাক ভবন নির্মাণের প্রাক্কলন প্রণয়ন করা হয়েছে। কারাগারে মহিলা কারারক্ষীদের জন্য পাঁচতলা বিশিষ্ট দুটি বাসভবনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কারারক্ষীদের জরাজীর্ণ নবোদয় ও স্বর্ণলতা ব্যারাক, টিনশেড দুটি দিগন্ত ব্যারাক এবং কারা কর্মচারীদের খাবার মেস টাইলসসহ বিশেষ মেরামত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বন্দিদের আবাসনের সমস্যা সমাধানের নিমিত্তে কীর্তনখোলা বন্দি ভবন ও সেমি-পাকা রূপসী বাংলা বন্দি ব্যারাক এবং মৃত্যুদ-প্রাপ্ত বন্দিদের ফাঁসির সেলের বিশেষ মেরামতকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গাডিং স্টাফদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রধান ফটকের সামনে প্যারেড গ্রাউন্ড পাকা আরসিসি ঢালাই করা হয়েছে। কারাগারের নিরাপত্তার স্বার্থে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন স্থাপন এবং ডাবল ফেইজ সংযোগ দেয়া হয়েছে। কারা হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তাসমূহের স্থায়ীভাবে গাইড ওয়াল স্থাপন ও রাস্তা পুনর্র্নিমাণ, পানি নিষ্কাশনের ড্রেন পুনর্র্নিমাণসহ বিশেষ মেরামতকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বন্দি ওয়ার্ডের জন্য বৈদ্যুতিক পাখা সরবরাহ ও স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। মহিলা ওয়ার্ডের বিশেষ মেরামতকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com